ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম: বিকাশ বর্তমান বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ডিজিটাল ফিন্যান্স সেবা। বর্তমান ঘরে বসেই দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টাকা লেনদেন করা যায় বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজেই। বিকাশ একাউন্ট হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। এই একাউন্টের মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজেই এবং দ্রুত টাকা পাঠানো, টাকা নেওয়া, মোবাইল রিচার্জ, বিল পরিশোধ এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেন করতে পারেন। how-to-open-bkash-account-2024

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হয় এবং এর বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে। তাই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা

ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ একাউন্ট খোলা বর্তমান একদম সহজ। একাউন্ট খুলতে হলে প্রথমেই আপনাকে প্লেষ্টোর থেকে বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। ডাউনলোড সম্পূর্ন হয়ে গেলে অ্যাপটি ওপেন করতে হবে।

এবার লগইন/রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনি যে মোবাইল নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই মোবাইল নাম্বারটি সঠিকভাবে বসিয়ে লিখে নিন।

.তারপর আপনি যে মোবাইল অপারেটরের সিম ব্যবহার করছেন সেটি সিলেক্ট করে দিন। সিলেক্ট করার পরে আপনার মোবাইলে ৬ ডিজিটের একটি OTP (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হবে, ৬ ডিজিটের গোপন নাম্বারটি সঠিকভাবে সাবমিট করতে হবে। এরপর, বিকাশের নিয়ম এবং শর্তাবলী দেখে এবং সম্মতি দিয়ে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে হবে।

বিকাশ অ্যাপ দিয়ে কি কি করা যায় | ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ অ্যাপ দিয়ে আপনি ঘরে বসেই অনেক কিছু করতে পারবেন খুব সহজেই। যেমন:

মোবাইল রিচার্জ: বিকাশ অ্যাপ দিয়ে আপনি নিজের মোবাইল নম্বরে রিচার্জ করতে পারেন বা অন্যান্য মোবাইল নম্বরেও রিচার্জ করে দিতে পারেন।
মানি ট্রান্সফার: আপনি বিকাশ অ্যাপ দিয়ে অন্য ব্যক্তিদের বা ব্যবসায়ীদের মাঝে টাকা পাঠাতে পারেন।
বিল পেমেন্ট: বিকাশ অ্যাপ দিয়ে বিভিন্ন বিল পরিশোধ করতে পারেন, যেমন বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ইন্টারনেট বিল, টিভি ক্যাবল বিল, ইত্যাদি।
অনলাইন শপিং: বিকাশ অ্যাপ দিয়ে আপনি অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনতে পারেন এবং বিকাশ ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে পারেন, যেমন দারাজ, রকমারি, আজকের ডিল, ক্লিক বিডি ইত্যাদি।
টিকা রেজিস্ট্রেশন: বিকাশ অ্যাপ দিয়ে টিকা নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা যায়।
ট্রাভেল টিকেট বুকিং: বিকাশ অ্যাপ দিয়ে আপনি ট্রেন, বাস, ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট এবং অন্যান্য যাতায়াত সার্ভিসের টিকেট কিনতে পারেন।

এছাড়াও, বিকাশ অ্যাপে আরও অনেক রকম সুবিধা রয়েছে। যেগুলো প্রতি নিয়ত আপনার কাজগুলোকে সহজ করে দিবে।

বিকাশ এর মার্চেন্ট একাউন্ট সুবিধা কি

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট হল একটি ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণের ব্যবস্থা যা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বিকাশ দ্বারা প্রদান করা হয়। এই একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

সহজে এবং দ্রুত পেমেন্ট গ্রহণ: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে দ্রুত এবং সহজে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। এটি ব্যবসায়ীদের সময় এবং অর্থ বাঁচাতে সাহায্য করে।
বিস্তৃত গ্রাহক ভিত্তি: বিকাশের ৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা এই বিশাল গ্রাহক ভিত্তি থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। এটি ব্যবসায়ীদের বিক্রয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
নিরাপদে পেমেন্ট: বিকাশ একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে নিরাপদভাবে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট গ্রহণ: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন, যেমন: বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পেমেন্ট, বিকাশ মার্চেন্ট কিউআর কোডের মাধ্যমে পেমেন্ট, কাউন্টার পেমেন্ট, বিকাশ ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট।

How to Open Bkash Account 2024

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে যেসব তথ্য প্রয়োজন হয়, সেগুলো হল:

ব্যবসায়ের নাম
ব্যবসায়ের ঠিকানা
ব্যবসায়ের লাইসেন্স নম্বর
ব্যবসায়ের মালিকের নাম
ব্যবসায়ের মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য ব্যবসায়ীরা বিকাশের ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ। এই একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়ের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং বিক্রয় বৃদ্ধিতে সহায়তা পেতে পারেন।

আমাদের অন্য আর্টিকেল গুলো পড়েন:

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট কি

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট হলো বিকাশের একটি সেবা যা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ভাসমান উদ্যোক্তা এবং অনলাইন ভিত্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য প্রদান করা হয়। এই একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খোলার জন্য আবেদনকারীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা পূরণ করতে হবে:

বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মকর্তা, শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ইত্যাদি পেশায় কর্মরত ব্যক্তি হতে হবে।
ব্যবসার কোনো দলিলপত্র থাকতে হবে।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টের সুবিধাসমূহ:

সহজে এবং দ্রুত একাউন্ট খোলা যায়।
বিকাশের ৫ কোটিরও বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করা যায়।
ব্যবসা পরিচালনার জন্যে সাপ্লায়ার বা ভ্যালু চেইনের পেমেন্ট পরিশোধ করা যায়।
বিকাশের অন্যান্য সেবাগুলো ব্যবহার করা যায়।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট খোলার জন্য আবেদন করার পদ্ধতি:

বিকাশের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে হবে।
আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিকাশের যেকোনো এজেন্ট পয়েন্টে জমা দিতে হবে।
বিকাশের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে একাউন্ট খোলা হবে।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টের লেনদেন সীমা:

প্রতিদিনের সর্বোচ্চ লেনদেন সীমা: ১ লক্ষ টাকা।
প্রতি মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন সীমা: ১০ লক্ষ টাকা।

বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্টের ফি:

একাউন্ট খোলার ফি: ১০০ টাকা।
প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণ ফি: ১০০ টাকা।

বিকাশ হেল্প লাইন নাম্বার

বিকাশ হেল্প লাইন নাম্বার হল ১৬২৪৭। এই নাম্বারে ফোন করলে আপনি বিকাশের গ্রাহক সেবা প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে পারবেন। বিকাশের গ্রাহক সেবা প্রতিনিধিরা বিকাশ সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে আপনাকে সাহায্য করবেন।

আপনি যদি ঢাকায় থাকেন, তাহলে বিকাশ গ্রাহক সেবা কেন্দ্রেও যেতে পারেন। বিকাশ গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের ঠিকানা এবং সময়সূচি বিকাশের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। আপনি চাইলে বিকাশের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও বিকাশের গ্রাহক সেবা পেতে পারেন।

শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে আমি ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং এর বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশাকরি আপনদের অনেক কাজে লাগবে। বিকাশ সম্পের্কে আরও কোন কিছু জানার থাকলে এই লেখার কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।