জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত: জাপান একটি উচ্চ-আয়ের অর্থনীতি সহ একটি উন্নত দেশ। এটি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে একটি এবং এটি প্রযুক্তি, যানবাহন এবং ইলেকট্রনিক্সের প্রধান প্রস্তুতকারক হিসেবে পরিচিত। সারা বিশ্বেই জাপানের উন্নত প্রযুক্তি উৎপাদনের খ্যাতি রয়েছে।
জাপান প্রতি বছর ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকে তাদের কাজের জন্য। আপনিও যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জাপানে গিয়ে উচ্চ বেতনে চাকরি এবং উন্নত জীবনযাপন করতে চান তাহলে এই পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে জাপান বিভিন্ন দেশের দক্ষ নাগরিকদের চাকরির সুযোগ দিয়ে থাকে। সরকারিভাবে জাপানে যেতে ভিসার জন্য কোনো টাকা লাগে না।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য বর্তমানে সরকারিভাবে করে বিএমইটি (BMET) রেজিস্ট্রেশন করে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করা যায়। এজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম জাপানি ভাষা শিক্ষা কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। এরপর ভাষা শিক্ষা কোর্স সম্পূর্ন হলে বিএমইটি (BMET) এর ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে তা পূরন করে পূনরায় বিএমইটির ইমেইলে পাঠাতে হবে।
তারপর তাদের প্রতিনিধি দল দ্বারা বাছাই করা হলে ইন্টার্ন পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরবর্তীতে জাপানি ভাষা, গণিত এবং শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়ার পর তারা যোগ্য প্রার্থীদের ইন্টার্ন কোর্স করিয়ে জাপানে প্রেরণ করে।
সরকারিভাবে ছাড়াও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করা যায়। সেক্ষেত্রে অনেক টাকা খরচ করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
জাপান যেহেতু একটি উচ্চ-আয়ের অর্থনীতি সহ একটি উন্নত দেশ সেহেতু জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা অবশ্যই অর্জন করতে হবে। সেগুলো হলো-
- সর্বপ্রথম আপনাকে নির্দিষ্ট যেকোন একটি কাজে দক্ষ হতে হবে।
- জাপানি ভাষা শিক্ষা কোর্স সম্পন্ন করতে হবে এবং এর প্রমানপত্র থাকতে হবে।
- টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (TTC) এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভিসার আবেদন করতে হবে।
- অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
এই যোগ্যতা গুলো থাকলে বাংলাদেশ থেকে যেকোন নাগরিক জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন কবরতে পারবে।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রাপ্তির জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি কাগজপত্র লাগে।
- ছয় মাস মেয়াদ সম্পন্ন একটি পাসপোর্ট
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষতা
- জাপানী ভাষা শিক্ষার সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত সনদপত্র
- করণা টিকা কার্ড
- মেডিকেল রিপোর্ট
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো না থাকলে আপনি জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেন করতে পারবে না। তাই আবেদন করার আগে অবশ্যই এই কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে রাখবেন।
জাপান যেতে কত টাকা লাগে?
বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে জাপান যেতে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মতো লাগে সকল খরচ মিলিয়ে। মেডিকেল রিপোর্ট ফি, পাসপোর্ট তৈরি এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য কিছু টাকা খরচ করতে হয়। সাথে জাপানি ভাষা শিক্ষা কোর্স করার জন্য ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে।
আর সরকারি ভাবে ছাড়া যদি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করে যেতে সব খরচ মিলে ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মতো লাগে।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি?
জাপানে যাওয়ার আগে অবশ্যই একটি বিষয় জেনে নেওয়া খুবই প্রয়োজন, আর সেটি হচ্ছে বর্তমানে জাপানে জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জাপানে জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে।
জাপানে বর্তমানে কয়েকটি কাজের উপর চাহিদা সব থেকে বেশি। সেগুলো হলো:
- কৃষিকাজ
- ক্লিনার
- হোটেল বয়
- সিকিউরিটি গার্ড
- ফুড ডেলিভারি
- নার্সিং
- মালি
- অটোমোবাইল মেকানিক
- ইলেকট্রিশিয়ান
উপরে উল্লেখিত কাজ গুলোর উপর বর্তমানে অনেক চাহিদা রয়েছে। জাপান প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে এসব কাজের জন্য হাজার হাজার শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। এই কাজ গুলোর মধ্যে যেকোন একটি কাজে অভিজ্ঞ হয়ে জাপানে গেলে অনেক ভালো বেতনে কাজ করা যায়।
জাপানে বর্তমান কৃষি কাজের উপর অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই অন্যান্য কাজের থেকে কৃষি কাজের বেতন তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা এবং বেতন বেশি
শেষ কথা
আজকের এই পোষ্টে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পেরেছেন। তাছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন এজেন্সি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রদানের কথা বলে অনেকের সাথে প্রতরনা করছে। তাই সরকারিভাবে ভিসা সংগ্রহ করুন যেন প্রতারিত হতে না হয়।
সবাই ভালো থাকবেন আর এস আর টেকজোন এর সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
FAQ’s
জাপান কাজের ভিসার দাম কত?
সরকারিভাবে কাজের ভিসায় জাপানে গেলে ভিসার দাম পরবে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা। আর বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে গেলে ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগে।
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি?
বর্তমানে জাপানে কৃষিকাজ, ক্লিনার, হোটেল বয়, সিকিউরিটি গার্ড, ফুড ডেলিভারি, নার্সিং, মালি, অটোমোবাইল মেকানিক এবং ইলেকট্রিশিয়ানের কাজের চাহিদা বেশি।
প্রশ্ন: জাপানে সর্বনিম্ন বেতন কত?
বর্তমানে জাপানে সর্বনিম্ন বেতন ২,১৭,২০০ ইয়েন।